Skip to main content

গঙ্গাসাগরের_পুণ্যস্নান_ও_তীর্থভূমি

বাংলা ৩০ শে পৌষ ১৪২৯
ইংরাজি ১৫ ই জানুয়ারি ২০২৩
রবিবার  উত্তরায়ন সংক্রান্তি
 দিবা  ১১ টা ৪৭ মিনিট এর মধ্য গঙ্গাসাগরের পুণ্যস্নান সম্পুন্ন করতে হবে। 

👉কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করেই
 পূণ্যস্নানও কপিল মুনির কাহিনী

বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব পৌষ পার্বণ  বা মকর সংক্রান্তি  দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগরদ্বীপে প্রত্যেক বছর আয়োজন হয় গঙ্গাসাগর মেলার  কপিল মুনির আশ্রমকে  কেন্দ্র করে পুণ্যস্নান ও বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গঙ্গায় পবিত্র স্থান করতে সেখানে দূর দূর থেকে আসেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী।  

👉কপিলমুনি ও সাগরদ্বীপে তাঁর মন্দিরের আসল কাহিনী। 

গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রম সাগরদ্বীপে প্রত্যেক বছর আয়োজন হয় গঙ্গাসাগর মেলার।
কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করে পুণ্যস্নান ও বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়।প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী।

বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব পৌষ পার্বণ  বা মকর সংক্রান্তি  পৌষ মাসের শেষ দিন পালন করা হয়। তবে এই উৎসবকে ঘিরে লোককথা শোনা যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাগরদ্বীপে প্রত্যেক বছর আয়োজন হয় গঙ্গাসাগর মেলার  কপিল মুনির আশ্রমকে  কেন্দ্র করে পুণ্যস্নান ও বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়। গঙ্গায় পবিত্র স্থান করতে সেখানে দূর দূর থেকে আসেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। 

👉 কপিলমুনি ও সাগরদ্বীপে তাঁর মন্দিরের আসল কাহিনী। 

* গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মিলিত স্থানকে বলা হয় গঙ্গাসাগর। এটি একাধারে যেমন তীর্থভূমি, আবার অন্যদিকে মেলাভূমি। এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই গঙ্গাসাগর মেলা। 

* কুম্ভ মেলার পর গঙ্গাসাগর মেলা দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু মেলা। বাংলার বাইরে ও বিহার উত্তর প্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্য থেকেও প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীরা পবিত্র তীর্থস্থান লাভের আশায় ভিড় জমান। 
* গঙ্গাসাগরের কপিল মুনি আশ্রমকে নিয়ে রয়েছে নানা লোককথা ও ইতিহাস। 

* কথিত আছে ইক্ষাকু বংশের রাজা সগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেন। ভীত হয়ে দেবরাজ ইন্দ কপিল মুনির অজান্তেই ঘোড়া চুরি করে বেঁধে রাখেন তাঁর আশ্রমে। রাজার ষাট হাজার সন্তান ঘোড়া খুঁজতে এসে উপস্থিত হন আশ্রমে। না বুঝেই তাঁরা মুনিকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন। কপিলমুনি রেগে গিয়ে তাঁদের অভিশাপ দেন এবং তাঁরা ভস্মীভূত হয়ে যায়।এদিকে সগর রাজবংশের উত্তরপুরুষ ভাগীরথ, মহাদেবকে তুষ্ট করে পতিত পাবনী গঙ্গাকে স্বর্গ থেকে মর্তে নিয়ে আসেন। গঙ্গার ধারার ভষ্মিভূত সেই সন্তানরা পুনর্জীবন লাভ করে সশরীরে স্বর্গে ফিরে যান। আর এই কারণেই হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে এটি একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।

* শোনা যায়  মহাভারতের বনপর্ব তীর্থযাত্রায় গঙ্গাসাগরের কথা বলা আছে।

* এছাড়াও পাল বংশের রাজা দেবপাল একটি লিপিতে তাঁর গঙ্গাসাগর সঙ্গমে ধর্মানুষ্ঠান করার কথা বলেছিলেন।লোককাহিনী অনুযায়ী এখানে কপিলমুনির আশ্রম ছিল। একসময় সে যে সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে আশ্রম এটিকে কেন্দ্র করে তাঁর ভক্তদের সমাগম বাড়তে থাকে।

* একজন বৈদিক ঋষি ছিলেন কপিল। তাঁকে সংখ্যা দর্শনের অন্যতম প্রবর্তক বলে মনে করা হয়। ভগবত গীতায় কপিলকে সিদ্ধাচল উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও হিন্দু প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে তিনি ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। আবার অনেকে বলেন কপিল হলেন বিষ্ণু ভক্ত অসুররাজ প্রহ্লাদের পুত্র।

* কপিল মুনির আশ্রম ঠিক কত বছরের পুরানো তা নিয়েও রয়েছে মত বিরোধ। 

* আরও শোনা যায়, ষোড়শ শতকের প্রাচীন পুঁথির তীর্থতত্ত্বপ্রদায়িনীতে কপিল মুনির মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। এক সময়ের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা ‘হরকরা’-য় ১৮৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এক প্রবন্ধ ছাপা হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘এই স্থানে (সাগর দ্বীপ) যে এক মন্দির আছে তাহা লোকের কাছে ১৪০০ বছর হইল গ্রথিত হইয়াছে। এই মন্দিরে কপিল মুনি নামে প্রসিদ্ধ দেবরূপ এক সিদ্ধপুরুষ প্রতিষ্ঠিত আছেন।"


* যোগেশচন্দ্র রায় তাঁর ‘পূজাপার্বণ’ গ্রন্থে এই প্রসঙ্গে বলেছেন, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে সূর্যবংশীয় রাজা বৃহদবল নিহত হয়েছিলেন। ভগীরথ তাঁর পূর্বপুরুষ। উভয়ের মধ্যে ৫২ পুরুষের ব্যবধান। ৫৩ পুরুষে ১৩০০ বছর। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৪১ অব্দে। অতএব ভগীরথ খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৪১ অব্দে ছিলেন। এই সময়ে কপিল মুনির আশ্রম ছিল।

* তাই কথায় বলে ' সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার'।

Comments

Popular posts from this blog

দেবী সুরেশ্বরী ভগবতী গঙ্গে,ত্রিভুবনতারিণি তরল তরঙ্গে

 || দেবী সুরেশ্বরী ভগবতী গঙ্গে,ত্রিভুবনতারিণি তরল তরঙ্গে || 💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦 আজ দশহরা গঙ্গা পূজা। গঙ্গা কলিযুগে পরম তীর্থ । বিশেষ করে সব শাস্ত্রই এই কথা বলে। মহাভারতে ঋষি পুলস্ত্য, ভীস্মের নিকট কীর্তন করেছেন- “যেখানে গঙ্গা আছেন সেটাই দেশ, গঙ্গা তীরের সেই দেশই তপোবন ও সিদ্ধ তীর্থ।” আর্য্য দিগের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থেও ‘গঙ্গা’ নাম উল্লেখ আছে । গঙ্গা বৈদিকী নদী । ঋক্ বেদের একটি শ্লোকে যমুনা, সরস্বতী, শতুদ্রী , পরুষ্ণী , অসিক্লী , মরুৎবৃধা , বিতস্তা , সুষোমা ও আর্জীকিয়া নদীর সাথে গঙ্গার নাম পাওয়া যায় ( ঋক্- ১০/৭৫/০৫) পুরাণ মতে স্বর্গ বাসিনী এই গঙ্গা দেবীকে মর্তে এনেছিলেন সগর রাজার বংশজ রাজা ভগীরথ । তিনি আবার ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের কূলের পূর্বপুরুষ । পৌরাণিক আখ্যান মতে সগর রাজার ষাটি হাজার পুত্র কপিল শাপে ভস্ম হলে, তাহাদিগের প্রেতাত্মার মুক্তির জন্য স্বর্গ থেকে গঙ্গা কে আনবার প্রয়োজন হয় । তপস্যা করতে করতে একে একে রাজা সগর, অসমঞ্জ, অংশুমান, দিলীপ রাজা দেহ ত্যাগ করেন। অবশেষে দিলীপ পুত্র ভগীরথ সফল হন। গঙ্গাকে মর্তে আনতে পারেন । ভোগোলিক তথ্যে গঙ্গার উৎপত্তি গোমুখী শৃঙ্গ ...

পান্ডবা নির্জলা একাদশী মাহাত্ম্য:

জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের এই নির্জলা একাদশী ব্রত সম্পর্কে ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে শ্রীভীমসেন-ব্যাস সংবাদে বর্ণিত হয়েছে। মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন- হে জনার্দন! আমি অপরা একাদশীর সমস্ত মাহাত্ম্য শ্রবণ করলাম এখন জ্যৈষ্ঠ শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম ও মাহাত্ম্য কৃপাপূর্বক আমার কাছে বর্ণনা করুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এই একাদশীর কথা মহর্ষি ব্যাসদেব বর্ণনা করবেন। কেননা তিনি সর্বশাস্ত্রের অর্থ ও তত্ত্ব পূর্ণরূপে জানেন। রাজা যুধিষ্ঠির ব্যাসদেবকে বললেন- হে মহর্ষি দ্বৈপায়ন! আমি মানুষের লৌকিক ধর্ম এবং জ্ঞানকান্ডের বিষয়ে অনেক শ্রবণ করেছি। আপনি যথাযথভাবে ভক্তি বিষয়িনী কিছু ধর্মকথা এখন আমায় বর্ণনা করুন। শ্রীব্যাসদেব বললেন-হে মহারাজ! তুমি যেসব ধর্মকথা শুনেছ এই কলিযুগের মানুষের পক্ষে সে সমস্ত পালন করা অত্যন্ত কঠিন। যা সুখে, সামান্য খরচে, অল্প কষ্টে সম্পাদন করা যায় অথচ মহাফল প্রদান করে এবং সমস্ত শাস্ত্রের সারস্বরূপ সেই ধর্মই কলিযুগে মানুষের পক্ষে করা শ্রেয়। সেই ধর্মকথাই এখন আপনার কাছে বলছি। উভয় পক্ষের একাদশী দিনে ভোজন না করে উপবাস ব্রত করবে।দ্বাদশী দিনে স্নান করে শুচিশুদ্ধ হয়ে নিত্যকৃত্য সমাপনের পর শ্রীকৃষ্ণের ...

আমরা আমাদের আসল পরিচয় জানি কি ?

এ ই জগতের প্রায় সবার জীবন দেহকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে । সবাই মনে করে আমি আমার দেহ । তাই সবার পরিচয়ও হয় দেহকেন্দ্রিক - ‘ আমি মানুষ , আমি পুরুষ , আমি নারী , আমি ছাত্র , আমি ডাক্তার , আমি ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি । কিন্তু আসলেই কি দেহই আমি বা আমরা ? কেউ মারা গেলে কেন আমরা বলি - “ অমুক চলে গেলেন । ” যদিও অমুকের দেহটি এখনাে বর্তমান ? নিশ্চয়ই দেহ থেকে এমন কেউ চলে গেছেন , যার অভাবে দেহ এখন নির্জীব , মৃত ; আবার যখন তিনি ছিলেন , তখন দেহ সচল , সজীব ও চেতন ছিল ।  - আমিই দেহ , নাকি আমার দেহ ?  স্বজ্ঞাগত এ বােধটি আমাদের প্রত্যেকেরই আছে যে , প্রকৃত ব্যক্তিসত্তা ‘ আমি আমার দেহ , মন ও বুদ্ধি থেকে পৃথক । তাই আমরা বলে থাকি । আমার হাত , আমার পা , আমার মাথা , আমার দেহ ' ইত্যাদি । ঠিক যেমন আমরা বলি - আমার জামা , আমার জুতাে ; কিন্তু কেউ কি কখনাে বলে - আমি জামা , আমি জুতাে ’ ? এ হাত , পা আদি অঙ্গ - প্রত্যঙ্গগুলাে তাে বটেই এমনকি পুরাে দেহটিও ব্যক্তিসত্তা ছাড়া কিছু করতে পারে না । এক এক করে এ অঙ্গ - প্রত্যঙ্গগুলাে বিচ্ছিন্ন বা প্রতিস্থাপন করলেও ব্যক্তি ‘ আমি ’ র অস্তিত্ব থাকে । কিন্ত...