"হরিদাস ছিলা পৃথিবীর শিরোমনী
যাহা বিনা রত্নশুন্য হইলা মেদিনী ।।""(চৈ,চ,ম)
আজ ১ সেপ্টমবর মঙ্গলবার ২০২০ইং,। নামাচার্য শ্রীলহরিদাস ঠাকুরের শুভ প্রয়ান দিন বা নির্যান তিথী।
তিনি ছিলেন নামের আচার্য, যার কাছে যুগধর্ম হরিনাম সংকীর্তন প্রবক্তা স্বয়ং শ্রীম্নমহাপ্রভু হরিনাম শিখেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন---- হরিদাস আমি তোমার কাছ থেকে নাম শিখলাম। তুমি আমার নামের গুরু।
নামাচার্য শ্রীল হরিদাস ঠাকুরের মহিমার অন্ত নেই। তিনি যশোহর জেলার ব্যূঢ়ন গ্রামে যবনকুলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অনেকে বলে থাকেন তিনি ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করছিলেন, কিন্ত সঙ্গদোষে যবন হন। তাদের সেই ধারণা ভ্রান্ত। যেমন শ্রীরামচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ ভক্ত হনুমান বানরকুলে, ভক্তশ্রেষ্ঠ প্রহ্লাদ অসুরকুলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তেমনই হরিদাস ঠাকুর যবনকুলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ভগবানের ভক্ত ভগবানের ইচ্ছায় যে-কোন স্থানে, যে-কোন কুলে জন্মগ্রহণ করতে পারেন,তিনি এই সবের উর্ধ্বে অপ্রাকৃত স্তরে অবস্থান করেন।
প্রকৃতপক্ষে হরিদাস ঠাকুর ছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। বৃন্দাবনলীলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন গোপবালক রূপে তাঁর সখাগণ সহ গোষ্ঠে বাছুরগুলিকে চরাচ্ছিলেন, তখন ব্রহ্মা কৃষ্ণের ভগবত্তাকে পরীক্ষা করার জন্য তাঁর অলক্ষ্যে গোপবালক সহ সমস্ত বাছুরগুলিকে একটি পাহাড়ের গুহায় মধ্যে লুকিয়ে রাখেন। অন্তর্যামী ভগবান ব্রহ্মার চালাকি বুঝতে পেরে নিজের অন্তরঙ্গ শক্তির মাধ্যমে আগের মতো সমগ্র গোপবালক ও গাভীদের সৃষ্টি করে পূর্বের ন্যায় লীলা করতে লাগলেন।
এখানে পার্থক্য হচ্ছে যে, আগের তাঁর গোপবালক সখারা আর বাছুরেরা ছিল জীতত্ত্ব এবং বর্তমানে প্রকাশিত গোপবালক বাছুরেরা হচ্ছে বিষ্ণুতত্ত্ব। এভাবেই ব্রহ্মা কৃষ্ণের অচিন্ত্য শক্তির প্রভাব দর্শন করে মোহিত হলেন এবং তাঁর পাদপদ্মে নিপতিত হয়ে বহু স্তব-স্তুতির দ্বারা ভগবানকে প্রসন্ন করলেন এবং ব্রহ্মাদেহের পরিবর্তে একটি হীন দেহ প্রার্থণা করলেন যাতে তিনি অহঙ্কারে মত্ত হয়ে ভগবানকে ভুলে না যান এবং সেই সঙ্গে তিনি বৃন্দাবনে তৃণ-গুল্ম হয়ে জন্মগ্রহণ করতে চান যাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর অন্তরঙ্গ পার্ষদ গোপ-গোপীদের পদধুলির স্পর্শলাভ করে নিজের জীববনকে ধন্য করতে পারেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-ব্রহ্মার প্রার্থণা রক্ষা করেছিলেন। চৈতন্যলীলায় সেই ব্রহ্মাই হয়েছিলেন যবন হরিদাস।
তাঁর আসন্ন শুভ প্রয়ান বা নির্যান তিথীতে তাঁর শ্রীচরনে বিনম্র দণ্ডবৎ প্রণাম ও প্রাথর্না নিবেদন করি,, যেন হরিনামের অপার অনন্ত মহিমা হৃদয়ে স্ফুরিত হয়।
জয় নামাচার্য শ্রীলহরিদাস ঠাকুর কি! ---জয়।
হরিনাম চিন্তামণি কি! ----জয়।
Comments
Post a Comment